মুম্বই এর সবচেয়ে বড় রেড লাইট এরিয়া কামাথিপুরায় শ্বেতার জন্ম।
ছোট থেকে জীবনের সঙ্গে লড়তে লড়তে আজ সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছে মেয়েটা।
শিক্ষকরাও তাঁকে আর পাঁচ জনের থেকে অন্য ভাবে দেখতেন।
পড়াশোনার জন্য চালিয়ে যেতে হয়েছিল কঠিন লড়াই।
এমনকি তাঁর বাড়িতে সৎ বাবাও তাঁর উপর অত্যাচার চালাতেন। সঙ্গে ছিল গালাগালি।
নিউ ইয়র্কের বার্ড কলেজ থেকে স্কলারশিপ পান শ্বেতা।
অনেক কঠিন পরিশ্রম এবং অধ্যাবসায় তাঁকে এনে দিয়েছে এই সাফল্য।
কিভাবে সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছে শ্বেতা? সে দিকেই নজর রাখা যাক।
ছোট থেকেই চরম দরিদ্রতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁকে।
জীবনের 17টা বছর রেড লাইট এরিয়াতেই কাটাতে হয়েছে তাঁকে।
তিনি জানান, “বাড়িতে ঝামেলা গালাগালি চলত সর্বক্ষণ। ছোট থেকেই অনেক ডিপ্রেশন এর মধ্যে কাটাতে হয়েছে আমাকে। আনন্দ কি জিনিস তা আমি বুঝিনি।”
তবে পড়াশোনার ব্যাপারে সর্বদা পাশে ছিলেন তাঁর মা।
ছোট থেকে তিনি নিজে পড়াশোনা করতে পারেননি কিন্তু শ্বেতা যেন স্কুলে যায় এবং মানুষের মতো মানুষ হয় , এটাই ছিল তাঁর মায়ের ইচ্ছা।
দরিদ্রতার কারণে কর্নাটকের বেলগ্রাম থেকে তাঁর মাকে চলে আসতে হয়েছিল এই রেড লাইট এরিয়ায়।
শ্বেতার একজন প্রতিবেশী, রাধা।
তিনিও ছিলেন একজন সেক্স ওয়ার্কার।
তিনি সর্বক্ষণ শ্বেতাকে মনে সাহস দিয়েছেন এগিয়ে যাওয়ার জন্য।
পরবর্তীকালে মুম্বইয়ের এসএনডিটি ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা করেন শ্বেতা
2012 সালে রবীন চৌরশিয়া প্রতিষ্ঠিত একটি এনজিও-তে কাজ শুরু করেন শ্বেতা। এনজিও -টির নাম ‘ক্রান্তি’।
সেই এনজিও- টির। উদ্দেশ্য ছিল মুম্বই এর রেড লাইট এরিয়া থেকে মেয়েদের নিয়ে এসে তাঁদের সঠিক সম্মান এবং সঠিক অধিকার দেওয়া।
পরবর্তীকালে জেন্ডার স্টাডিজ এর উপর এমএ কমপ্লিট করেন তিনি।
শ্বেতার স্বপ্ন ছিল,
লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে মানুষের মধ্যে যে পুরনো ধ্যান- ধারণা সেটা ভেঙে দিয়ে নতুন করে কিছু করার।
শ্বেতাই কামাথিপুরার প্রথম মহিলা যিনি সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গেছেন।
মালালা-র মত শ্বেতাও প্রান্তিক শ্রেণীর মেয়েদেরকে সামনের রাস্তায় এগিয়ে দেওয়ার পথে অনেকটাই সহযোগিতা করেছেন।
শ্বেতার গল্প আমাদের এটাই শিক্ষা দেয় যে, স্বপ্নের কোন শেষ নেই। প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাওয়াটাই আসল লক্ষ্য হওয়া উচিত।